কিছু মানুষ সবসময় খুব উড়ুউড়ু মনে থাকে। অন্যের দিকে নজর দিয়ে কেমন যেন একটা উদাসীন হয়ে যায়। নিজেকে তুচ্ছ ভাবতে থাকে। নিজেকে খুব মূল্যবান মনে করে তখন, যখন অন্য কেউ তাকে মূল্য দেয়। প্রত্যাশা থাকে সবসময় মানুষের কাছে। এজন্য মানুষের কাছে নিজেকে উপস্থাপনে সর্বদা ব্যস্ত থাকে।
কখনো এমন জায়গায় নিজেকে রেখে অন্যের কাছে নিজের মূল্য প্রত্যাশা করে যেখানে তার মূল্য দেওয়ার মত যোগ্যতা সম্পন্ন কেউ নেই। এমন জায়গাতে সে নিজের যথাযথ মূল্য পায়না। এজন্য সে খুব হতাশ হয়ে পড়ে। মানসিক কষ্ট আর দুর্দশায় পতিত হয়। কখনো এই ব্যাপারটাখু গভীরভাবে তার মানসিক স্বাস্থ্যে আঘাত করে। এমতাবস্থায় কেউ তাকে বোঝাতে গেলেও সে কোনকিছু বুঝতে সক্ষম হয়না।
করনীয়ঃ
আপনার নিজেকে প্রথমত নিজেকে নিজের ভাল থাকার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার যোগ্যতা কি এবং আপনি কোথায় থাকার জন্য উপযুক্ত। এমন জায়গাতে নিজেকে রাখবেন না যাতে আপনার নিজের আত্মমর্যাদা নষ্ট হয়।
যেমন- আপনি যদি প্রকৃতপক্ষে হীরার মত মূল্যবান হন আর আপনার নিজেকে একজন কামারের কাছে উপস্থাপন করেন তবে আপনি কখনোই আপনার উপযুক্ত মূল্য পাবেন না। বরং আপনি অপমানিত হবেন। আপনার মান মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে। আপনি যদি নিজেকে স্বর্ণকারের কাছেও উপস্থাপন করেন তবুও আপনি আপনার যথাযোগ্য স্থান নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছেন। আপনি সেখানেও আপনার পূর্ণ মর্যাদা পাবেন না। অপমান আপনাকে পদে পদে নিগৃহীত করবে।
আপনার নিজেকে হীরা ক্রেতার কাছেই কেবল মানাবে। আপনি যদি আপনার জন্য উপযুক্ত ক্রেতা না পান তবে অপেক্ষা করুন। প্রয়োজনে সারাজীবন অপেক্ষা করুন। তবু আপনার অনুপযুক্ত জায়গাতে আপনাকে স্থাপন করবেন না। আপনি এতেই ভাল থাকবেন।
জগতে আত্ম-প্রশান্তির চেয়ে মূল্যবান কিছুই আর নেই। আপনার নিজেকে ভাল রাখুন। নিজের মূল্য আগে বুঝুন। নিজেকে চিনুন। নিজের জন্য যা উপযুক্ত নয় সেটাতে কখনো নিজেকে সংযুক্ত করবেন না।
সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকেই মূল্যবান কিছু দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। নিজের কাছে সৃষ্টিকর্তার দানকৃত নিয়ামতকে চিনুন, বুঝুন, এবং এর যথাযথ ব্যবহার করুন।
সবচেয়ে বড় যেটা আপনার নজর বিগড়ে রাখে সেসব দিক থেকে নিজের নজরকে নিচু করে নিন। দেখবেন আপনাকে আকর্ষণ করা লোকগুলো নিজেদের লোক দেখানো কর্মকাণ্ড করে আর তেমন প্রশান্তি পাচ্ছে না। কারন তারা আপনার নজরকে আকৃষ্ট করার জন্যই কেবল চেষ্টা করে থাকে। আপনি যদি না দেখেন তাতে তারাও রিয়ার হাত থেকে বেঁচে গেল আর আপনিও মানসিক অশান্তি থেকে। তাদেরকে এতটা মূল্যবান মনে করার কিছু নেই। সৃষ্টিকর্তার কাছে কেবলমাত্র ভাল কর্ম ছাড়া কেউ বেশী মূল্যবান হয়না। আর এই ভাল কর্মগুলো করতে কখনো লোক দেখানো লাগে নাহ! বরং মালিক গোপনে কৃত উত্তম কর্মগুলোকেই বেশী পছন্দ করেন।
সুতরাং নিজেকে মানুষের কাছে উত্তম না করে সৃষ্টিকর্তার কাছে ভাল করুন। এর জন্য নিজেকে প্রদর্শনের প্রয়োজন হবে না। আর একজনের প্রদর্শনে অন্যজনও নিজেকে মানসিক বিপর্যস্থতায় ফেলবে না। সবকিছুর শেষে বলতে চাই- নিজেকে অন্যদের কাছে প্রদর্শনের ইচ্ছা অথবা যে নিজেকে প্রদর্শন করছে তার দিকে এত মূল্য সহকারে দৃষ্টি নিপাত না করার মত করে নিজেকে বদলে ফেলুন।
নিজের মূল্য বুঝতে সক্ষম হবেন, নিজেকে এর মাধ্যমে উপলব্ধি এবং উপভোগ করতে পারবেন। এ দুদিনের দুনিয়া দুদিনের খেল তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। চেষ্টা করুন, নিয়ত পরিচ্ছন্ন করুন। সাহায্য করার মালিক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা।
No responses yet